আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম

এই ব্লগে আসার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি ভালো লাগে তবে মন্তব্য দিন। আপনার মন্তব্য আমার লেখা উন্নয়নে সহায়তা করবে। পড়তে থাকুন এবং নিয়মিত চোখ রাখুন।

ফেসবুকে পছন্দ করেছেন

রবিবার, ২৯ জুলাই, ২০১২

কবিতা আজ লিখবোই


আজ রাতে কবিতা লিখব
ঘুমুতে দেব না শব্দ দের কে
নিঃশব্দ রাখব না আর আবেগ
কলমের আঘাতে 
ক্ষত বিক্ষত হবে আজ কবিতার খাতা
কলমের রক্ত ঝরিয়ে হলেও লিখব কবিতা
লিখব কবিতা আজ রাতে।

নির্ঝরা স্বপ্নগুলোকে
আজ ঝরিয়েই ছাড়ব।
বুক আঁকড়ে পরে আছে অনেকদিন হয়,
কান্না হয়েও বেরিয়ে আসে না তারা
আজ কলমের ডগা দিয়ে
খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বের করে আনব
লিখব কবিতা আজ রাতে।

নালিশ জানালাম ভাবের দরজায়
জানালাম শব্দদের সেচ্ছাচারিতার কথা
বলেছিল অপেক্ষা করতে...
অপেক্ষায় থেকে থেকে অতিষ্ঠ, বিরক্ত আমি
আজ পিঠ থেকে গেছে দেয়ালে
তাইত বিধ্বংসী মনোভাবে
যুদ্ধংদেহী হয়ে বসেছি
লিখবোই কবিতা আজ রাতে।

লিখতে লিখতেই ভাবছি
আজ আর শুনব না কারো কথা
মানবো না নিয়ম, শাসন,
দেখবোনা ব্যকরন, সন্ধি কিংবা সমাস
কিংবা ণত্ব ষত্ব বিধান
ধার ধারব না আজ কোন কালের
ধার ধারব না ছন্দবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত বা অক্ষরবৃত্তের
যে করেই হোক আজ লিখবোই
লিখবোই কবিতা আজ রাতে।

রবিবার, ২২ জুলাই, ২০১২

পাপিষ্ঠ কামের অনুরণন


অব্যাক্ত বোবা কান্না,
কষ্টের সুগঠিত ধূলিকণায় মিশে
নিরাশার অনন্ত মরুভূমি মাঝে,
ধূসর আবহ করে সৃষ্টি।
সেই আবহমান ধূসরতা ঘেরা জীবন যখন,
তখনও ছাড়ে না পিছু
নির্লিপ্ত নির্লজ্জ কামুকতা।

অদ্ভুত এই কামনা,
না বোঝে সময়,
না মানে নিয়ম, শাসন,
পরিক্রমা তার নির্লজ্জ এতটাই,
ক্ষুধিতের দেহেই নাকি অধিক বিচরণ।
নির্লিপ্ত স্খলনে
কষ্ট ঝেড়ে সুখী হতে চাওয়া যেন।

এরই মাঝে....
চারিদিকে আবার উলঙ্গ উন্মাদনা
মন না জাগলেও,
শরীর জেগে উঠে প্রতিক্ষণ, অকারন
যদিও এখনও আছে আরও কিছু শব্দ গোপন
সত্য হয়না মিথ্যা হলেও অকথ্য
কারনে অকারনে শত বারণেও জাগ্রত।

মুমূর্ষ নিস্তেজ বিবেকের জাগরন
ঠিক তখনই হওয়া চাই
যখনই মন কেঁপে উঠে
পাপিষ্ঠ কামের অনুরণনে।।

    বুধবার, ১১ জুলাই, ২০১২

    প্রিয় বাবার প্রতি ভালবাসা



    প্রিয় মানুষটির প্রতি ভালবাসা কোন দিবসের উপর নির্ভর করে না। তবুও দিবসগুলো আমাদের অন্তত কিছু ভাললাগা স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়, কিছু অমূল্য সময়কে মনে করিয়ে দেয়, যা কেটেছে ঐ প্রিয় মানুষটির সঙ্গে। বাবা দিবস বলে কখনও কোন দিবস পালন করিনি। বিশেষ কোন আয়োজন হয়নি। বাবাকে গলা জড়িয়ে বলা হয়নি, “বাবা তোমাকে ভালবাসি”। কেন যেন মনে হয় যে, এতোটা যান্ত্রিক এখনও হয়ত হইনি, যতটা যান্ত্রিক হলে বাবার জন্য আলাদা সময় বের করতে হয়।

    আমার বাবাকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি সমাজ, সভ্যতা, ধর্মীয় জ্ঞান থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছু আমাদের দুই ভাইবোনকে হাতে ধরে ধরে শেখাতেন। যদিও সময় খুব কম পেতেন, প্রতিদিন আব্বু যখন উনার ব্যবসার উদ্দেশে ঘর থেকে বের হতেন, আমরা ঘুমিয়ে থাকতাম। আবার যখন বাড়ি ফিরতেন গভীর রাতে তখনও আমরা ঘুমাতাম। পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার এবং কলতাবাজার এলাকায় কেটেছে আমার শৈশবের শুরু থেকে অনেকটা অংশ। আমাদের প্রতিবেশী এক বিহারী লোক প্রায়ই আমার আম্মাকে বলতেন, “ইমরান তো উস্কি আব্বাকো নেহি পেহেচানেগা”। আম্মা মুচকি হাসতেন। অনেক সময়ই আব্বুর ঘরে ফেরার আওয়াজ পেলে আমি জেগে উঠতাম। যে কোন বিশেষ দিন, যেমন ২১ ফেব্রুয়ারী, ১৬ ডিসেম্বর, শবে বরাত, ইত্যাদি দিনগুলোতে আব্বা পুরান ঢাকার কাচ্চি বিরিয়ানি নিয়ে আসতেন। আদর এবং শাসনের দ্বৈত রুপ দেখেছি আমার বাবার মধ্যে।

    আমার বাবা ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধের সময় তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর রেগুলার ফাইটার হিসেবে। এক অপারেশনে তিনি গুলিবিদ্ধ হন এবং আহত অবস্থায় অনেক লম্বা সময় তিনি হাসপাতালে ছিলেন। যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে সবাই ধরে নিয়েছিল যে আব্বা আর জীবিত ফিরবেন না। কিন্তু তিনি ফিরেছিলেন বিজয়ীর বেশে। আমার দাদার কাছে শুনেছি, আব্বা খুব রাগী ছিলেন ছোটবেলা থেকেই। কোথাও কোন অন্যায় উনি সহ্য করতেন না। মৃত্যুকে কখনও ভয় করতেন না। সদরঘাটের অনেক অস্রধারী সন্ত্রাসীকে উনি খালি হাতে পিটিয়েছেন। জীবনে উনি কোন নেশা করেননি। হারাম উপায়ে উপার্জন থেকে সর্বদা দূরে থেকেছেন। ছোটবেলা থেকেই প্রচুর পরিশ্রম করেছেন পরিবারের জন্য। ছোট ভাইদের মানুষ করেছেন, নিজের পায়ে দাড়াতে শিখিয়েছেন। উনার সততা এবং পরিশ্রমের জন্য উনি এখনও আমাদের গ্রামের বিভিন্ন জেনারেশনের কাছে জনপ্রিয়। 

    আমাদের দুই ভাইবোনকে আব্বা সেই সব কিছুই না চাইতে দেবার চেষ্টা করেছেন, যেটা উনি ছোটবেলায় পাননি। আব্বা মেধাবী ছাত্র ছিলেন, কিন্তু পারিবারিক কিছু কারনে গ্রাজুয়েশন করতে পারেননি। কিন্তু আমাদেরকে উনি লেখাপড়ার কোন বিষয়ে কখনও কমতি রাখেননি। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন, ধন সম্পদ মানুষকে বড় করে না, মানুষ তার মনের সমান বড়। সবসময় সবাইকে সমান দেখার পরামর্শ দিয়েছেন। মানুষের যে কোন সমস্যায় এগিয়ে যাওয়াতে আব্বা সবসময় উৎসাহ দিতেন এবং এখনও দেন। মাঝে মাঝে আমি মনে মনে ভাবি যে, আমি কি আব্বার মত হতে পারব? পরমুহুর্তে চিন্তা আসে, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমি পারব না, এটা হতেই পারে না।

    আপনি আমাদের গর্ব আব্বা। কোন বিশেষ দিনের জন্য আপনার প্রতি শ্রদ্ধা বরাদ্দ থাকবে না। আপনি আমাদের মনের মণিকোঠায় থাকবেন সর্বক্ষণ। সামনাসামনি হয়ত কখনও বলা হয়নি। কিন্তু পরোক্ষ ভাবে বলছি, “আব্বা, আপনাকে আমি খুব ভালবাসি।“

    trafficG