আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম

এই ব্লগে আসার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি ভালো লাগে তবে মন্তব্য দিন। আপনার মন্তব্য আমার লেখা উন্নয়নে সহায়তা করবে। পড়তে থাকুন এবং নিয়মিত চোখ রাখুন।

ফেসবুকে পছন্দ করেছেন

শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৩

হৃদয় বনাম মন

কটু ভূমিকা দিয়েই শুরু করতে চাইঃ 

“আমার এই লেখাটিকে শিরোনাম দেখে স্রেফ প্রেমের গল্প ভেবে ভুল করার কোন কারন নেই। কারন Never judge a book by it’s cover.” বাকিটুকু পড়ার আমন্ত্রন জানাই।
আমাকে কিছুদিন আগে একজন প্রশ্ন করেছিল, “মানুষ কি পা দিয়ে হাঁটে না মাথা দিয়ে হাঁটে?” আপাতদৃষ্টিতে প্রশ্নটি অবান্তর মনে হলেও একটু গভীরে গেলে এর চমৎকার কিছু বাস্তবতা পাওয়া যাবে। আসুন একটু গভীরে যাই।

## আমাদের সারা শরীরে ছড়িয়ে আছে স্নায়ুতন্ত্র(Nervous System)। যার ক্ষুদ্রতম একক হল নিউরন। অনেকেই ভাবতে পারেন যে নিউরন কেবল আমাদের ব্রেইনে থাকে। কিন্তু আমাদের সারা শরীরেই ছড়িয়ে আছে এই নিউরন (neuron)। অর্থাৎ নিউরন হচ্ছে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষুদ্রতম একক।


এই Nervous system কে আবার দুইভাগে ভাগ করা যায়,
1.Central nervous system
2.Peripheral nervous system.

সিগন্যাল ট্র্যান্সফরমেশন এর উপর ভিত্তি করেও দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়,
1.Motor
2.Sensory


সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম গঠিত হয় ব্রেইন এবং স্পাইনাল কর্ড দিয়ে। আর পেরিফেরাল নার্ভাস সিস্টেম ছড়িয়ে থাকে সারা শরীরে। প্রতিটি নিউরন যদিও নিরবচ্ছিন্ন ভাবে পারস্পরিক সম্পর্ক যুক্ত মনে হয়, কিন্তু একটি নিউরনের আক্সন এবং অন্য নিউরনের ডেন্ড্রাইট এর মাঝে সুক্ষ ফাঁকা বিদ্যমান। যাকে বলা হয় synapses.


আমাদের ব্রেইনে যে কোন সিগন্যাল যে নিউরন সেটের মাধ্যমে পৌঁছায়, তাদেরকে “সেন্সরি” বলা হয়। এবং ব্রেইন থেকে যে সিগন্যাল স্পাইনাল কর্ড হয়ে শরীরের অন্য কোন স্থানে পৌঁছায় তাকে “মোটর” বলা হয়। অর্থাৎ আপনি আগুনের কাছে হাত নিয়ে গেলে, আগুনের সংস্পর্শে আসা অংশের নিউরন ব্রেইনে সিগন্যাল পাঠাবে অবস্থার বিবরন দিয়ে, এই সিগন্যালই হচ্ছে “সেন্সরি”। আপনার ব্রেইন তখন সেই সিগন্যালকে এনালাইসিস করে ব্রেইন হাতকে সিগন্যাল পাঠাবে যে হাত সরিয়ে নাও। এই সিগন্যাল কে বলে মোটর। নিউরন গ্যাপে থাকে একধরনের ক্যামিক্যাল সাবস্টেন্স যাকে বলা হয় নিউরোট্রান্সমিটার (ছবিতে লাল লাল দানাগুলো)। আমাদের দেহে দুই ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার আছে।

1. Excitatory Neurotransmitter (Acetylcholine, Epinephrine, Serotonin, Endorphin, Prostaglandin etc. )

2. Inhibitory Neurotransmitter (GABA, Glycine etc. )

ব্রেইনের কাজ হচ্ছে Controlling & Coordinating. এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে আপনাদের কাছে আছে গুগল নামের চেরাগের দৈত্য। হুকুম করলেই হাজির।
আসুন এবার দেখে নেই, আমাদের বিভিন্ন অরগ্যান এর উপর নার্ভাস সিস্টেম এর অবস্থার প্রভাব। অর্থাৎ Sympathetic vs Parasympathetic state of nervous system


বোঝাই যাচ্ছে যে আমাদের মন বা mind বলতে যা বোঝানো হয়, তা মুলত হৃদয় (Heart) নয়, ব্রেইন। এবার আসুন দেখে নেই হৃদয়(Heart) এর উপর ব্রেইন এর প্রভাব,


অর্থাৎ ব্রেইনের উত্তেজিত স্টিমুলেশন এ হৃদ স্পন্দন বৃদ্ধি পায়। তাই অনেকের কাছে মনে হয় ঘটনাটা হৃদয় ঘটিত। আসলে ঘটনা তো ব্রেইন ঘটিত। তেমনি আমাদের ব্রেইনের বিভিন্ন স্টিমুলেশনের কারনে বিভিন্ন গ্রন্থি থেকে গ্রন্থিরস নিঃসৃত হয় যা আমাদের হৃদয়ের স্পন্দনে তারতম্য ঘটায়।


মুলত হৃদয়ের কোন ইন্টিলেঞ্জেসি নাই। এটা স্রেফ একটা পাম্পিং মেশিন মাত্র। যত ভালবাসার গান, অনুভব, অনুভূতি কোনটাই কিন্তু হৃদয়ে নাই। হৃদয় অনেকটা বোকা বাক্স। অনেকেই বলেন, কিছু সিদ্ধান্ত হৃদয় দিয়ে নাও। কিন্তু দুঃখের বিষয় এটাই যে হৃদয় দিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়াই সম্ভব না।


তেমনি আমাদের হাত পা বা অন্যান্য কোন অর্গ্যান এর ই তেমন উল্লেখযোগ্য কোন ইন্টেলিজেন্স নেই। তাই, আমরা মাথা দিয়ে হাঁটি বললেও যুক্তি দিয়ে সেটা প্রমান করা সম্ভব।

(আমার জানার মধ্যে ঘাটতি থাকতেই পারে। আমি সবজান্তা নই। আরও ভালো এবং প্রয়োজনীয় তথ্য কারো কাছে থাকলে অবশ্যই শেয়ার করবেন মন্তব্য এর ঘরে।)

trafficG