|
গাড়ির জন্য কমলাপুর অপেক্ষা করছি আমি আর সাজ্জাদ |
কাউসার ভাই চিটাগাং আরো স্পেসিফিক
বললে ফটিকছড়ির ছেলে। ফটিকছড়ি আর খাগড়াছড়ি পাশাপাশি। খাগড়াছড়িতে উনার এক ভাই থাকেন।
ওখানেই ব্যবসা করেন। কাউসার ভাইয়ের বদৌলতে সাজেকের রিসোর্ট বুকিং, চাঁদের গাড়ি
বুকিং, বারবিকিউ এরেঞ্জমেন্ট, চিটাগাং এ হোটেল বুকিং, মাইক্রো বুকিং, ট্যুর
প্ল্যান বা মিশনের নীল নক্সা করা হয়ে গেল। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি বাস টিকিট শিমুল ভাই
এরেঞ্জ করে ফেললেন। আমাদের প্ল্যান হল, ১৬/০৩/২০১৬ তারিখ রাতে ঢাকা থেকে বাসে
খাগড়াছড়ি। সেখান থেকে চাঁদের গাড়িতে দীঘিনালা নেমে কিছু কেনাকাটা যেমন বারবিকিউ এর
জন্য মুরগী, পানি, শুকনো খাবার, ইত্যাদি। সেখান থেকে সাজেক ভ্যালী। সাজেক ভ্যালীতে
আমরা ১৭ তারিখ রাত থাকবো। ১৮/০৩/২০১৬ তারিখ সকালে রওয়ানা হয়ে আবার খাগড়াছড়ি, পথে
আমরা ঘুরব আলুটিলা গুহা, রিসাং ঝরনা এবং হর্টিকালচার পার্কের ঝুলন্ত ব্রিজ। রাতেই
রওয়ানা হব চিটাগাং এর উদ্দ্যেশে। ১৮ তারিখ রাতে চিটাগাং হোটেলে থেকে ১৯ তারিখ সারা
দিন চিটাগাং ঘুরে দেখব, যাতে থাকবে, ফয়’স লেক, ভাটিয়ারী
মিলিটারি একাডেমী, পতেঙ্গা। ১৯ তারিখ রাতের ট্রেনে ঢাকা ফিরব। প্ল্যান প্রোগ্রাম
শেষ করে শুরু হয় কেনাকাটার পালা। যেহেতু লং জার্নি কিছু কেনাকাটা তো করতেই হয়।
কেনাকাটার ব্যাপারে আযম ভাই আর মাসুদ ভাইয়ের সে কি উৎসাহ। আমি ছিলাম সেই উৎসাহে
যোগান দাতা।
|
গামছা কেনার সময় ট্রায়াল দিচ্ছেন শিমুল ভাই.. |
প্ল্যান হল সবাই এক কালারের
টি-শার্ট আর গামছা কিনব। টি-শার্টের কালার নিয়ে লাগলো প্যাঁচ। মাসুদ ভাইয়ের পছন্দ
পার্পেল তো আযম ভাইয়ের পছন্দ মিষ্টি কালার, শিমুল ভাইকে স্কাই ব্লুতে নাকি বেশি
মানায়। গামছার কালার লাল বা সবুজ এই নিয়ে কারো সমস্যা ছিল না। ফাইনালি গামছা কিনতে
গিয়ে দেখা গেল একই কালারের অর্থাৎ ১২ টা লাল বা ১২ সবুজ পাচ্ছি না। শেষে সিদ্ধান্ত
হল ৬ টা লাল আর ৬ টা সবুজ নেব। ফাইনালি টি-শার্ট কিনতে আবার সমস্যা, আমাদের
সিলেকশনের কনফিউশনে এক কালারের যে টি-শার্ট আমরা পছন্দ করেছি সেটা ১২ পিস বিভিন্ন
সাইজ মিলিয়ে দেয়া যাবে না। সারা মার্কেটে নাই। শেষে আমি বুদ্ধি দিলাম, যারা সবুজ
গামছা তাদের লাল টি-শার্ট আর যাদের লাল গামছা তাদের সবুজ টি-শার্ট। শিমুল ভাই আমি
ফোনে মাসুদ ভাই, আযম ভাইয়ের সাথে কথা বলে এটা ফাইনালি কিনে ফেললাম।
দেখতে দেখতে ১৬ তারিখ চলে এলো। আমাদের বাস ছিল রাত ১০.৩০ টার “শ্যামলী”। সাড়ে ১০
টায় কলাবাগান থেকে আযম ভাই, আহাদ ভাই, ইমদাদ ভাই, শিমুল ভাই, মাসুদ ভাই, ইমন,
গাড়িতে উঠে, ১১.১৫ তে আমি, সাজ্জাদ, সজীব ভাইকে কমলাপুর থেকে তুলে রওয়ানা হল
আমাদের স্বপ্ন গাড়ী। শ্যামলী গাড়িটার ড্রাইভার খুব এক্সপার্ট অথবা পাগলাটে ছিল।
তার গাড়ী চালানোর ভঙ্গিতে আমি ছাড়া সারারাত আর গাড়িতে কেউ ঘুমুতে পারেনি।
|
ভোর বেলায় যখন খাগড়াছড়ির কাছাকাছি |
|
এই আমাদের চাঁদের গাড়ি |
সকাল
বেলা খাগড়াছড়ি নেমেই কাউসার ভাইয়ের উষ্ণ অভ্যর্থনা পেলাম। উনি আমাদের জন্য
বাসস্টপেই অপেক্ষা করছিলেন। কাউসার ভাইয়ের বড়ভাইয়ের বাসায় ব্যাগপ্যাক রেখে আমরা
ফ্রেশ হয়ে সকালের নাস্তা করে নিলাম। খাগড়াছড়ি থেকে চিটাগাং এর অগ্রিম টিকিট কেটে
রাখলাম। এর মাঝেই আমাদের চাঁদের গাড়ী নিয়ে ড্রাইভার শিবু উপস্থিত। সারা ট্রিপে
শিবু আমাদের অসাধারন সার্ভিস দিয়েছে এবং আমাদের লোকাল গাইড হিসেবে কাজ করেছে। সবার
ব্যাগপ্যাক গাড়িতে তুলে দিয়ে আমারা গাড়ি চেপে বসলাম। গাড়ী ছেড়ে দিল সাজেকের উদ্দ্যেশ্যে।