আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম

এই ব্লগে আসার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি ভালো লাগে তবে মন্তব্য দিন। আপনার মন্তব্য আমার লেখা উন্নয়নে সহায়তা করবে। পড়তে থাকুন এবং নিয়মিত চোখ রাখুন।

ফেসবুকে পছন্দ করেছেন

মঙ্গলবার, ১৩ মার্চ, ২০১২

আপনারা কিছু বুঝিতে পারিতেছেন?


বেশ কিছু বৎসর ধরিয়া অন্তর্জালের সহিত আমার সখ্য গড়িয়া উঠিয়াছে। সেই সুবাদে দেখিয়াছি অনেক কিছু, শিখিয়াছি ও বিস্তর। বড়ই পরিতাপের বিষয় এই যে, অন্তর্জালের সাথে এই সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় আমার মনে একটি কথাই ঘুরিয়া ফিরিয়া উদয় হইতেছে, “আমরা কি পুনরায় আদিম যুগে ফিরিয়া যাইতেছি?” আমার মনে গহীনে উকি দেয়া এই প্রশ্নটির উত্তর হইল “হ্যাঁ”। তবে সাথে করিয়া লইয়া যাইতেছি কিছু আস্তিক, নাস্তিক তর্ক। আর কিছু লুলিয় ভাবনা। যাহা হয়ত আদিম মানুষের মাঝেও পরিলক্ষিত হইত না। এমন কি মায়ান জাতিও এই লুলিয় আচরন বুঝিত না।

অনেকের কাছেই শুনিতেছি যে, পৃথিবী নাকি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ২০১২ সালেই নাকি পৃথিবী ধ্বংস হইয়া যাইবে, মায়ান, এজটেক ছাড়াও বিভিন্ন সভ্য এবং অসভ্য জাতিগন ইহা ভবিষ্যৎ বানী করিয়া গিয়াছেন, ২০১২ তে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ লইয়া এই সভ্যতার বিজ্ঞানীগণ ও অতিশয় চিন্তিত হইয়া পড়িয়াছেন।

আস্তিক এবং নাস্তিকতা লইয়া আমি মনের বেশ কিছু অংশ জুড়িয়া দুঃখিত। কারন, একদিকে যেমন ধর্মকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করিয়া আস্তিকগন কে সমৃদ্ধ করা হইতেছে, ঠিক তেমনি ভাবে বিজ্ঞানের কিছু আলোচনা রেফারেন্স টানিয়া নাস্তিকতা একটা শিল্পে পরিণত হইতেছে। কেহ আবার ইহাকে হালের ফ্যাশন বলিয়াও আখ্যায়িত করিতেছেন। অপরদিকে বাড়িয়া চলিয়াছে জঙ্গিবাদ। আমার মাঝে মাঝে সন্দেহ হয় যে, এই জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব বাস্তবে যতটুকু পরিলক্ষিত হয়, মিডিয়া তাহার চেয়ে অনেক বেশি এইটা ফুটাইয়া তুলিতেছে না তো? ঠিক বুঝিতে পারি না কি হইতেছে।

আমি পৃথিবীর বুকে ছোট্ট একটি দেশে বসবাস করিতেছি। উহাকে বাংলাদেশ নামে অভিহিত করা হইয়া থাকে। ১৯৫২ তে আমরা বাংলা ভাষা অর্জন করিয়াছি বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে। পৃথিবীর আর কোন জাতি, ভাষার জন্য এমন আত্মত্যাগ করে নাই। ইহার সুবাদে ২১ ফেব্রুয়ারি কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হইয়াছে। এই বাংলা ভাষাতেই সর্বাধিক রচিত হইতেছে লুলিয় সাহিত্য। ফেসবুক, ব্লগ এবং ওয়েব সাইটের কল্যানে আমরা চর্চা শিখিতেছি বাংলার ইরেজি ভার্সনের। যাহাকে বাংলিশ বলা হইয়া থাকে। মাঝে মাঝে অবাক হইয়া ভাবি, এই জাতি উন্নতি কি করিয়া করিবে। আমাদিগের আশেপাশে ছড়াইয়া ছিটাইয়া আছে কেবলই হতাশা আর হতাশা। শিল্পীরা অহরহ গাহিয়া চলিতেছে, “ফাইট্টা যায়, বুকটা ফাইট্টা যায়” অথবা গাহিতেছে “তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়” অথবা গাহিতেছে “আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি”। আপনারাই বলুন সার্বক্ষণিক হতাশা দেখিয়া কি আশাবাদী হইতে ইচ্ছে করে? 

মানুষ দিন দিন বাস্তবের সামাজিকতা ভুলিয়া একা হইতে চাইতেছে, স্বাধীনতার নাম লইয়া, স্বেচ্ছাচারিতার পোশাক গায়ে চড়াইতেছে, প্রচণ্ড রকম স্বার্থপর হইয়া যাইতেছে, আর অন্তর্জালে সামাজিকতা চর্চা করিতেছে। আর সেইখানেই শিখিতেছে ফেক আর লুলিয় আচরন। মোরগে ডিম পাড়িতেছে, নগ্ন বিবাহ অনুষ্ঠিত হইতেছে, রক্তচাপ, ডায়বেটিক, বক্ষব্যাধি, ইত্যাদি রোগ বাড়িতেছে। রাজনীতি আক্রান্ত হইতেছে দুর্নীতি, টেন্ডারবাজী, খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, রোগে। অস্থিতিশীল হইতেছে অর্থনীতি। সবাই আবর্জনা বলিয়া হাঁটিয়া চলিয়া যাইতেছে, কেহই এই আবর্জনা পরিস্কার করিতে উদ্যোগী হইতেছে না, পাছে উনি আবর্জনায় আবৃত হন এই ভয়ে। মানুষ নম্রতা ভুলিয়া হিংসা কে আপন করিয়া নিতেছে। তবে কি ইহাই ধ্বংসের লক্ষন? আমি বুঝিতে পারিতেছি না। আপনারা কি বুঝিতেছেন?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

trafficG