আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম

এই ব্লগে আসার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি ভালো লাগে তবে মন্তব্য দিন। আপনার মন্তব্য আমার লেখা উন্নয়নে সহায়তা করবে। পড়তে থাকুন এবং নিয়মিত চোখ রাখুন।

ফেসবুকে পছন্দ করেছেন

রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৩

কষ্ট দেবার খেলা..


নিজেকে কষ্ট দেবার খেলায় মেতেছি,

ইচ্ছে করেই জমিয়ে রাখছি কষ্টগুলো,
হয়ত আজকের এই জমানো কষ্টই হবে
বাকি জীবনের পথের পাথেয়।
কারো সাথে ভাগ করে নিচ্ছিনা বা পারছি না,
এ খেলার শুরু যেদিন থেকে,
নিজেই বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি কষ্টের বোঝা,
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে এর ভার;
ঝেড়ে ফেলতে চেয়েও কেন জানি ঝেড়ে ফেলছি না।

কাঁক ডাকা ভোরে বিছানা ছাড়া থেকে
গভীর রাতে ঘরে ফেরা পর্যন্ত চলছে
কষ্ট সংগ্রহের এই নিবিড় অনুশীলন আমার।
নিজের সাথে নিজেই বলছি কথা
আর বাকিটা দিয়ে ভরছে কবিতার খাতা।
কলমের ডগা দিয়েও আজ কেন জানি আসছে না,
আসছেনা আমার পুঞ্জিভূত কষ্টের কথকতা।

হৃৎপিণ্ডের বিরামহীন কম্পনসম,
টিক টিক করে ছুটে চলছে সময় অবিরত
দেখতে না দেখতেই পার হয়ে এসেছি অনেকটা পথ
নিজেরই অজান্তে শুরু হয়েছিল যে পথচলা।
অনেক ভেবে, নিজেকে প্রশ্ন করে করে ক্লান্ত আমি,
উত্তরের অপেক্ষাতে এখন আর থাকি না।

প্রশ্নের পর প্রশ্ন জমিয়ে বুকে গড়েছি বিস্তীর্ণ পর্বত
সেই পর্বতের বিভিন্ন অংশে আছে সুউচ্চ পাহাড়
দু’চোখে জমিয়ে রেখেছি সাগর, আছে নোনা জল
আর এ দু’য়ের মাঝের আকাশে লুকিয়ে আছে,
লুকিয়ে আছে মেঘ হয়ে, কান্না আমার-
ঠিক কখন তা ঝরবে বৃষ্টি হয়ে, তা নিজেই জানিনা। 

আমি ৫২ দেখিনি, দেখিনি ৭১...


মি ৫২ দেখিনি, আমি ৭১ দেখিনি, আমি শুনেছি, পড়েছি সেই কথা, জেনেছি উত্তাল সেই দিনগুলোর দিনপঞ্জি একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার কাছে। আমি জেনেছি পাক হানাদার আর দোসর রাজাকারদের সহিংসতার কথা। আমি জেনেছি অত্যাচারিত নিপীড়িত বাংলার মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর উপ্যাখ্যান। আমি জেনেছি ভাষার জন্য জীবন দেয়া বাঙ্গালির পরিচয়। আমি বুঝতে শিখেছি, জাতিয়তা, আমি বুঝতে শিখেছি পতাকা, আমি অনুভব করেছি স্বাধীনতা। আমি অনুভব করেছি বিজয়। 

আমার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে দেখেছি, শক্ত চোয়াল আর মুষ্টিবদ্ধ হাত হয়ে যেত ৭১ এর গল্প বলার সময়। আমিও উদ্দীপ্ত হতাম, মনে মনে ভাবতাম, আরেকটা সুযোগ পেলে আমি হব মুক্তিযোদ্ধা। আমিও দেশের জন্য প্রান রাখব বাজি। আমিও গর্বিত হব এই দেশ মাতৃকার সুযোগ্য সন্তান হিসেবে। দুর্নীতি আর ফ্যাসিবাদী রাজনীতি কে ঘৃণা করতে শিখেছি। সত্য সুন্দর পথের ঠিকানা জেনেছি। পুরোপুরি না হোক, সাধ্যমত সেই পথে চলার চেষ্টা করেছি। আজ বড় কষ্ট হয় এই ভেবে, এই স্বাধীন দেশে একদল ফ্যাসিবাদী পশু আমাকেও বলে রাজাকার, আমার বাবাকেও বলে রাজাকার।

আমি মুসলমান। খুব গর্ব করে বলি। অনেক বেশি ভাগ্য নিয়ে জন্মেছিলাম বলেই হয়ত, একজন মুসলমান এবং মুক্তিযোদ্ধার ঘরে আমার জন্ম। কিন্তু রাজনৈতিক প্রহসন আমাকে আজ নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। একজন বিখ্যাত লোকের উক্তি শুনেছিলাম, পাগলের রাজ্যে যে নিজেকে মানিয়ে নিতে চায়, সে নির্ঘাত একজন পাগল। আজ নিজেকে কেন জানি পাগল মনে হচ্ছে। আজ এই প্রানপ্রিয় দেশে অসাম্প্রদায়িকতার নামে মানুষের অন্তরে ভাইরাস ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে, মানুষে মানুষে চলছে খুনাখুনি, এক মুসলমান মারছে আরেক মুসলমানকে। নাস্তিকতা ফ্যাশনে পরিনত হচ্ছে। এক ধর্মের বিরুদ্ধে অন্য ধর্মের লোকদের লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে শুধুই রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য। ক্ষমতা এতটাই প্রিয় যে দেশকে সংঘাত এর দিকে, ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতেও কার্পন্য করছে না। 

এই দেশ কি চেয়েছিল মুক্তিযোদ্ধারা? এই দেশের তরুন প্রজন্ম আজীবনই কি রাজনৈতিক ফায়দা লোটার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে? শাহাবাগ আন্দোলনের শুরু আমাকে নতুন দিগন্ত দেখিয়েছিল, সেই দিগন্তের সুর্য উঠার আগেই কিভাবে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে বাজেয়াপ্ত হয়ে গেল, খুব কষ্ট পেয়েছিলাম তখন। আজও পাচ্ছি প্রতি মুহুর্তে। আর কতকাল ধর্মের নামে, দেশের নামে কাদা ছোড়াছুড়ি আর নোংরামি চলবে। আর এই নষ্টামিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এই দেশ আর ধর্ম। তরুন সমাজ কি কখনও নিজের হৃদয়ের কথা শুনবে না? আজীবন কি তারা রাজনৈতিক কলের পুতুলই হয়ে থাকবে? আমি আশাবাদী। আমি হতাশ হতে চাই না। আমি চাই তরুণরা জেগে উঠুক। সত্যিকারের জেগে উঠা। এই দেশে আবারও প্রতিষ্ঠিত হোক আইনের শাসন। যতদিন এই দেহে থাকবে প্রান, সোনার বাংলা দেখার স্বপ্নেই বেঁচে থাকব আমি।

উৎসবমুখর নৈরাজ্য

একটা কবিতা লিখব বলে
কবিতার খাতা নিয়ে বসি
মনের ভিতর উঁকি দিয়ে দেখি
ভেতরটা শুন্য, অন্ধকার আর নিরুত্তর
ভেবে ভেবে ভাবনার ছেঁড়া সুতো নিয়ে
আরও বেশি ভাবনায় ডুবে যাওয়া
আস্তে আস্তে তন্য তন্য করে খুঁজে ফেরা
শব্দরা ডুবে আছে সেই নিস্তব্ধ অন্ধকারে।

তোমাকে ভাবার চেষ্টা করলাম বেশ করে
তোমার চোখ, তোমার ঠোঁট, তোমার নৈরাজ্য
যেন ভাবনাকে আরো বেশি ধোঁয়াটে করে
তুমিও যেন আমার নিরবতা নিয়ে মেতে আছ
মেতে আছ উৎসবমুখর নৈরাজ্যে।

ভাবতে ভাবতেই দুচোখে ভর করে ঘুম
যেন ঘুমাইনা কত সহস্র বছর ধরে
আলতো করে বন্ধ দুচোখের ক্যানভাসে
জল রঙ্গে মনের তুলিতে আঁচর কাটি
শত চেস্টাতেও ফোটেনা কোন অবয়ব
ঘিরে ধরে ক্লান্তি, ধ্যানমগ্নতা থেকে গভীর ঘুমে
নিজেকে সঁপে দিয়ে হই নিথর, নির্বাক
শুন্য থাকে আমার শখের কবিতার খেরোখাতা।

trafficG