আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম

এই ব্লগে আসার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি ভালো লাগে তবে মন্তব্য দিন। আপনার মন্তব্য আমার লেখা উন্নয়নে সহায়তা করবে। পড়তে থাকুন এবং নিয়মিত চোখ রাখুন।

ফেসবুকে পছন্দ করেছেন

শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১২

“নেটওয়ার্ক মার্কেটিং” (Network Marketing) আশীর্বাদ না অভিশাপ ??


Network marketingপ্রতিদিন আমরা ন্যূনতম ৫০০ পণ্য ব্যাবহার করে থাকি। এই সকল পণ্য সমূহ কোনটাই আমরা সাধারনত উৎপাদন করি না। এই পণ্য সমূহ উৎপাদনকারী থেকে ভোক্তা পর্যন্ত আসার পুরো প্রক্রিয়াকেই মার্কেটিং বা বিপনন বলে,

বিপননের ব্যাপারে পরিস্কার ধারনা পেতে পণ্য বিপনন এর বিভিন্ন যুগের কথা একটু জেনে নেই,

উৎপাদন যুগ(Production ERA)---- এটির সময়কাল ১৯২০ সাল পর্যন্ত ছিল। যখন পণ্য উৎপাদন করাটাই ছিল কঠিন। যারা উৎপাদন করতে পারত, ক্ষমতা তাদের হাতেই ছিল কারন একটি পণ্য কিভাবে উৎপাদন হয়, এই ফর্মুলা ছিল গুটি কয়েক লোকের হাতে। এক্ষেত্রে 4P এর দিকে নজর বেশি দেয়া হত। Product, Price, Place, Promotion.

বিক্রি যুগ(Sales ERA)---- ১৯২০-১৯৫০ পর্যন্ত ছিল বিক্রয় যুগ। যখন অনেকেই পণ্য উৎপাদন করতে পারত। তখন শুধু উৎপাদনের ক্ষমতা দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রন করা যেত না। তখনই শুরু হল বিজ্ঞাপনী প্রচারনা। তখন যে কোম্পানি ভালো বিজ্ঞাপন উপস্থাপন করতে পারত, তার পণ্য ভালো চলত। এক্ষেত্রে জোর দেয়া হত, Sustaining, Targeting, Positioning .

বিপনন যুগ (Marketing ERA)---- ১৯৫০ এর পর থেকে পণ্য বিপণনের এই ধারাও বদলে গেল। এবং শুরু হল এক নতুন যুগের, যেখানে ক্রেতা বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয় না। বাজারে খুব বেশি প্রতিযোগিতা শুরু হল। তখন ক্রেতার মন রক্ষা করাই হল কোম্পানিগুলোর প্রধান কাজ। এবং শুধু তাই নয়, ক্রেতা কি চায় তা খুঁজে বের করা এবং তাই অভাব পূরণ করা হল কোম্পানি গুলোর লক্ষ্য। অর্থাৎ ক্রেতাকে শুধু ক্রেতা নয়, বরং একজন মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা। ফিলিপ কটলার এই Marketing ERA নিয়ে একটা বই লিখেছেন “New Marketing ERA in Region. Marketing 3.0” এই যুগের অন্যতম এই বিপনন ব্যবস্থার নামই হচ্ছে “Network Marketing”

বিখ্যাত লেখক এবং নেটওয়ার্কার John Milton Fogg এর ভাষায়, “Network Marketing combines two of the most powerful forces at work in our world today, Network & Marketing.” অর্থাৎ নেটওয়ার্ক এবং মার্কেটিং, এই দুটি শক্তিকে একত্রিত করে যে শক্তিটি কাজ করছে তাই হল নেটওয়ার্ক মার্কেটিং।

এর সংজ্ঞা বিভিন্ন ভাবে দেয়া যায়, তবে এক কথায় “কোন পণ্য বা সেবা, কোন ক্রেতার কাছে দ্রুত এবং সহজে, কোন ব্যাক্তি, দল বা নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে পৌঁছে দেবার পদ্ধতিকেই নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বলে। এটাকে হোম বেজ মার্কেটিং, মাল্টিলেভেল মার্কেটিং, ডাইরেক্ট সেলস, ফ্রিডম এন্টারপ্রাইজ ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়।

এর উদ্ভব হয় আনুমানিক ১৯৪০ সালে। উদ্ভাবক ছিলেন ডঃ কার্ল রেইন বোর্গ। 
দীর্ঘ চরাই উৎরাই পেরিয়ে ১৯৫৮ সালে এটি আমেরিকান পার্লামেন্টে ফ্রাঞ্চাইজ মার্কেটিং সিস্টেম এর পাশাপাশি ১০ ভোট বেশী পেয়ে স্বীকৃতি পায়।
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কে বিল ক্লিনটন
তারপর থেকে বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১৩০ টির ও বেশী দেশে প্রায় ১৩০০০ এর ও বেশী কোম্পানি এ সিস্টেমে ব্যবসা করছে।

Dr. Richard Laser এর মতে, “Network marketing doesn’t make individuals free, it’s liberating the whole nation.”

Bill Gets এর বলেছেন, “If I would be given a chance to start all over again, I would choose Network Marketing”

Waren buffet এর মতে "Network marketing is the Best Investment I Ever Made"

পৃথিবীর অন্যতম নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানি যেমন AMWAY, AVON, USANA, SKYBIZ, TUPPERWARE, ইত্যাদি। বিশ্বে এই নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানিগুলোকে একটি নির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় আনার জন্য গঠিত হয়, Direct Selling Association(DSA) এবং Federal Trade Commission(FTC). আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মালশিয়াতে এই সিস্টেম চর্চা শুরু হয় ১৯৭৩ সালে, কিন্তু দীর্ঘ ২০ বছর পর অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে মালশিয়াতে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় এই সিস্টেমকে বৈধতা দেয়া হয়। বর্তমানে মালশিয়াতে প্রায় ৮৫০ কোম্পানি এই সিস্টেম চর্চা করছে।
কিছুদিন আগে ইস্তাম্বুলে World federation Direct Selling Association(WFDSA) এর আয়জনে অনুষ্ঠিত হল ডিরেক্ট সেলিং কনফারেন্স। যেখানে বিশ্বের প্রায় সকল নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানি গুলো উপস্থিত হয়েছিল।একমাত্র বাংলাদেশী কোম্পানি এবং উক্ত অনুষ্ঠানের প্লাটিনাম স্পন্সর ছিল Destiny-2000ltd


এই সিস্টেমটি এতো জনপ্রিয় হওয়ার পিছনের কারণগুলো হোলঃ
১. কোন বড় বিনিয়োগ এর প্রয়োজন নেই
২. কোন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই
৩. অল্প সময় বিনিয়োগ করেই শুরু করা যায়
৪. কোন ঝুঁকি নেই
৫. কোন নির্দিষ্ট স্থান, কাল, পাত্র নেই
৬. রয়েছে নিশ্চিত এবং স্থায়ী আয়ের সুযোগ
৭. প্রচুর মানুষের সাথে বন্ধুত্ব হওয়ার এবং তাদের সাহায্য করার সুযোগ
৮. দ্রুত অবসর গ্রহনের সুযোগ
৯. প্রচুর সম্মান
১০. প্রচুর অর্থ উপার্জনের সুযোগ ইত্যাদি।

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর সৌন্দর্য বলে শেষ করা যাবে না। পোস্টের আকার বৃদ্ধি করব না। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে আপনাদের কাছে আছে ইন্টারনেট। একটু সার্চ দিলেই পেয়ে যাবেন প্রচুর তথ্য উপাত্ত। বিল ব্রিট, এন্থনি রবিন্স এর মত লোকেরা কিন্তু পৃথিবীর সেরা সেরা নেটওয়ার্কার।

*** এই সিস্টেমটির প্রসার এর সাথে সাথে একশ্রেণীর লোক এই সিস্টেমের সাদৃশ্য একটি ধোঁকাবাজি পদ্ধতি চালু করে যাকে বিশ্বে পিরামিড স্কিম বলে। এই পিরামিড স্কিম একধরনের জুয়া। এবং সারা বিশ্বে এই পিরামিড স্কিম নামের ধোঁকাবাজি সিস্টেমকে নিষিদ্ধ করা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের দেশের তথাকথিত কিছু পণ্ডিত ব্যাক্তিগন পিরামিড স্কিমের সাথে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কে সবসময় গুলিয়ে ফেলেন।

পিরামিড স্কিম এবং নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর পার্থক্য


আরেকটি গুরত্বপূর্ন কথোপকথন

তাই সবার প্রতি আমার আহবান থাকবে, নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কে জানুন বুঝুন। গঠনমূলক মন্তব্য করুন। সব কাজ সবার ভালো লাগবে না, তাই বলে সেই কাজ খারাপ হয়ে যাবে না। অনেকেই মনে করেন যে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা এম.এল.এম দ্রুত বড়লোক হবার কোন সিস্টেম। তাদের উদ্দেশে বলছি, নেটওয়ার্ক মার্কেটিং দ্রুত বড়লোক হবার কোন সিস্টেম নয়। অন্য সব বিপনন ব্যাবস্তার মত এটিও একটি বিপনন ব্যাবস্তা। এই বিষয়ে অনার্স, মাস্টার্স সহ বিভিন্ন প্রফেশনাল কোর্স চালু আছে ইন্ডিয়া, আমেরিকা সহ সারা বিশ্বে, আমাদের দেশেও কিছু ইউনিভার্সিটি এই সাবজেক্ট চালু করার কথা ভাবছে।

মার্কেটিং গুরু Philip Kotler এর একটি উক্তি হচ্ছে “Network Marketing will dominate future world”


এক নজরে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং জরিপ

আরও বিস্তারিত জানতে সহযোগিতা করবে এমন কিছু বইঃ

** Think Network Marketing & Grow Rich – Major C Mohon
**Going the Distance in Network Marketing – K.Sow. Ph.D
**Wave 3, The New Era In Network Marketing – Richard Poe
**Who Stole The American Dream? – Burke Hedges
**The Everything Network Marketing Book – Margaret Kaeter
** Network Marketing Wolds’s Greatest Opportunity – John Kalench

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর বাংলাদেশী নীতিমালা নিয়ে প্রথম আলোর রিপোর্ট পড়ুন এখানে..........

তাই না জেনে বুঝে উল্টা পাল্টা বলার অভ্যাস পরিত্যাগ করুন। মানুষকে এই আধুনিক বিপনন ব্যাবস্তা সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ সবাইকে।

রবিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১২

"সবার জন্য শুভকামনা রইল"

মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি গঠিত হয় তার চিন্তা থেকে, আর চিন্তা তৈরি হয় বিশ্বাস থেকে, কোন কিছু বোঝার পরই তৈরি হয় বিশ্বাস, আর বুঝা যায় ঐ বিষয় সম্পর্কে জানলে। তাই আমাদের আচরন বা দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন বা উন্নয়নের জন্য প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু শিখতে হয়। আজ আমি একটা বিশেষ ঘটনা সম্পর্কে আপনাদের অভিহিত করব, যেটা জানার পর আপনারা পারতপক্ষে বদদোয়া বা খারাপ চিন্তা করবেন না।


আমাদের চিন্তা বা Thoughts হচ্ছে একধরনের চৌম্বক তরঙ্গ বা Magnetic Wave। আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক হচ্ছে এটার ট্রান্সমিটার এবং রিসিভার। যেহেতু এটা একধরনের তরঙ্গ। তাই বলা যায় এটার একটা ন্যূনতম শক্তি রয়েছে। এবং এটা এর কম্পাঙ্কের উপর ভিত্তি করে আকর্ষণ শক্তি প্রয়োগ করে। এই চিন্তাশক্তি আমাদের জীবনের উপর প্রচুর প্রভাব বিস্তার করে। আমাদের মস্তিষ্ক প্রতিদিন ৬০০০০ চিন্তা করতে পারে। যা আমরা নিয়ন্ত্রন করতে পারি না। যার ফলে অনিয়ন্ত্রিত চিন্তা আমাদের কোন ভালো ফলাফল এনে দেয় না তবে আমাদের কিছু ক্ষতি করে। ঠিক একারনেই আমরা চিন্তাশক্তির ব্যাপকতা বুঝতে পারি না।


এটাকে আমরা সূর্যের আলোর রশ্নির সাথে একটি পরিক্ষামুলক তুলনা করতে পারি। সূর্য কিরন প্রতিমুহূর্তে এই পৃথিবীতে পড়ছে। কিন্তু কোথাও কিন্তু সহসাই আগুন ধরে যাচ্ছে না। বা আমরা যখন রোদে হাঁটছি, আমাদের গা পুড়ে যাচ্ছে না। এই সূর্য রশ্নিকেই যদি একটি ম্যাগ্নিফ্লাইং গ্লাস এর মাধ্যমে একীভূত করা যায় বা ফোকাস করা যায়, তবে আমরা দেখতে পাই যে ফোকাস বিন্দুতে তাপ তৈরি হচ্ছে। এবং এটা ব্যাবহার করে দ্রুত আগুন ধরানোও সম্ভব। তেমনি আমাদের চিন্তাগুলো কে একীভূত করে অনেক অসাধ্য ঘটনা ঘটানো সম্ভব।


আমাদের চিন্তা আমাদের আশেপাশের পরিবেশের উপরও ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। অর্থাৎ আপনি যদি ভালো কিছু চিন্তা করেন তবে ভালো কিছু ঘটবে। এবং খারাপ চিন্তার ফসল ও খারাপ হবে। আর যেহেতু আপনার মস্তিষ্ক এটার ট্রান্সফরমার এবং রিসিভার তাই আপনার ভালো বা মন্দ চিন্তার বা ফ্রিকয়েন্সির তরঙ্গ তার পূর্ণ চক্র কমপ্লিট করার জন্য আপনার কাছেই ফিরে আসবে। আর আসার সময় তার প্রকৃতি অনুসারে আরও কিছু এনার্জি নিয়ে আসবে। অর্থাৎ পজিটিভ হলে পজিটিভ এবং নেগেটিভ হলে নেগেটিভ।


আমাদের চিন্তা যে বস্তুতে পরিণত হয় বা বস্তুর উপর প্রভাব বিস্তার করে এই নিয়ে জাপানের একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ডঃ ইমোতো (Dr. Emoto) ১৯৯০ সালে দুটি পরীক্ষা করেন।


প্রথম পরিক্ষায় উনি দুটি বয়ামে ভাত নেন। একটি বয়ামের উপর লেখেন “আমি তোমাকে ভালবাসি” এবং অন্যটিতে লেখেন “আমি তোমাকে ঘৃণা করি”। বয়াম দুটি উনি দুটি স্কুলের গেইটে রাখেন এবং বাচ্চাদের বলেন যে প্রতিদিন স্কুলে ঢুকার এবং বের হওয়ার সময়, যে বয়ামে যা লিখা আছে, তা বয়ামের সামনে দাড়িয়ে বলতে। সাত দিন পরের চিত্রটা ছিল এমন.............



দ্বিতীয় পরীক্ষা উনি করেন পানির উপর। ভিডিওটি মনযোগ দিয়ে দেখুন...............
পানির উপর চিন্তার প্রভাব




যদি পানির উপর আমাদের চিন্তা প্রভাব বিস্তার করতে পারে তবে মানুষের ক্ষেত্রে সেটা কি হতে পারে, যেখানে মানুষের শরীরের ৬০% পানি??


একটু ভাবুন!!!!! অন্যের জন্য বদদোয়া করলেও কিন্তু সেটা আমাদের জন্যও সত্য হয়ে যেতে পারে। কারন পানি আমাদের শরীরেও আছে।


তাই আজ থেকে আসুন আমাদের চিন্তার ধারা এবং দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করি। এবং সবার জন্যই দোয়া করি। অর্থাৎ Good Wish করি।


সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, ভালো চিন্তা করুন। আর আমার জন্যও দোয়া করুন।


শুভকামনা সবার জন্য

trafficG