সাজেক!! খাগড়াছড়ি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার পাহাড়ঘেরা অনিন্দ্য সুন্দর একটা
যায়গা। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা আর দুর্গম রাস্তা হওয়া সত্তেও প্রচুর পর্যটক আসেন সাজেক
ভ্যালীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে। ফেসবুকে ছবি দেখে দেখে সাজেক যাওয়ার ইচ্ছেটা মনের
কোন জমে উঠেছিল অনেক আগেই। পরিবেশ, পরিস্থিতি, সময় সবমিলেয়ে ব্যাটে বলে হচ্ছিল না।
সোনালী ব্যাংকার্স ফেসবুক গ্রুপ থেকে কিছুদিন আগে নৌবিহার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই
আয়োজনের আয়োজক কমিটিতে আমার থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল। সফলভাবে সেই আয়োজন করতে গিয়ে
আয়োজক কমিটিতে থাকা সহকর্মীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। আয়োজন
চলাকালীন ফেসবুক গ্রুপ চ্যাটে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত কত কত প্ল্যানিং, আড্ডা,
আলোচনা আমরা করেছি তার হিসেব নেই। সেই সফল আয়োজন শেষে আমরা উপলব্ধি করলাম, আয়োজন
করতে গিয়ে নিজেরা উপভোগ করতে পারিনি। তাই শিমুল ভাইয়ের প্রস্তাব ছিল, নিজেরা একটু
আনন্দ করতে এবং আমাদের মধ্যকার গড়ে উঠা এই সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে সাজেক ট্যুরের
আয়োজন করলে কেমন হয়!! আমার মত অনেকের মনের কোনেই হয়ত এই সুপ্ত বাসনাটা লুকায়িত
ছিল। তাই প্রস্তাবনার পর পরই বলা যায় সাথে সাথেই আমি, জসিম ভাই, মিজান ভাই মিলে
একটা কবিতা লিখে ফেললাম।
শীতের শেষে পাহাড়ে, ঘুরতে যাব আহারে,
দেখবো আকাশ,দেখবো মেঘ,আনন্দ কই কাহারে!
মুগ্ধ হব ঝলমলে ঐ নীল আকাশের বাহারে,
গোমড়া মুখে যে জন থাকে আনন্দ দেই তাহারে।
পাহাড় বেয়ে রাস্তা ধরে চলছে চাঁদের গাড়ি,
রাখালিয়ার বাঁশি শুনি,কোথায় যে তার বাড়ি!
স্নিগ্ধ হাওয়ার স্নিগ্ধ ছোয়ায় মন মজেছে আজ।
গোধূলিতে দেখবো যে আজ সাজেক বধূর সাজ।
ধিতাং ধিতাং মাদল বাজে,সাথে বাঁশির সুর,
দুচোখ ভরা স্বপ্ন শুধু আনন্দে ভরপুর।
পাহাড় তোমার ছোঁব আজি,তুমি কতদুর?
এই যে দেখ এনেছি আজ সোনালী রোদ্দুর।
আজি জ্যোৎস্না শুধুই মোদের তরে,আমরা দামাল দল।
ঘুম হবে না,জাগবো রাতি,জ্যোৎস্না বিহার চল।
হাটবো পথে দেখবো চাঁদ,হোকনা আরো গভীর রাত,
ঝি ঝি পোঁকার গান শুনবো,দূর পাহাড়ে বাঁশির সুর
পড়বে গলে আকাশ থেকে সাতরঙা রঙ রংধনুর
চাঁদের আলোয় করব স্নান,কে কে যাবি সাজেক ট্যুর!!
লিখে ফেলা এই কবিতা যেন সবাইকে সাজেকের পথে আরেক ধাপ স্বপ্নাতুর করে ফেলল। আযম
ভাই, শিমুল ভাই, কাউসার ভাই তো রীতিমত প্ল্যান করা শুরু করে দিল। আস্তে আস্তে
সেখানে যুক্ত হল ইমদাদ ভাই, মাসুদ ভাই, বন্ধু সাজ্জাদ, সজীব ভাই, আহাদ ভাই। আমাদের
এই সাজেক আলোচনার জন্য “সাজেক ট্যুরের পোলাপাইন” নামে
ম্যাসেঞ্জারে রীতিমত একটা চ্যাট রুম খোলা হল। কামরুল ভাই এই সুযোগে ইচ্ছে আরো চাগিয়ে দিয়ে তার
সাজেক স্মৃতিচারন করতে লাগলো। আমাদের তখন চোখে ভাসছে শুধু পাহাড় আর আকাশের মাঝে
মেঘের রাজ্য সাজেক।