আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম

এই ব্লগে আসার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি ভালো লাগে তবে মন্তব্য দিন। আপনার মন্তব্য আমার লেখা উন্নয়নে সহায়তা করবে। পড়তে থাকুন এবং নিয়মিত চোখ রাখুন।

ফেসবুকে পছন্দ করেছেন

শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১২

প্রাগৈতিহাসিক

বেশ কিছুদিন যাবত তেমন কোন কাজকম্ম নাই বিধায় প্রচুর অবসর সময় পাইয়াছিলাম। এই সময়ে বেশ কিছু বই পড়িলাম। আশেপাশের বিভিন্ন কাণ্ডকারখানা নজরে আসিল। ব্যস্ত থাকিতে হয়ত সেগুলোকে তেমন আমল দিতাম না। সবচেয়ে বেশি যে গল্পটা পারিপার্শ্বিকতার সাপেক্ষে মনে সর্বাধিক দাগ কাটিয়াছে সেটি হইল “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” এর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প “প্রাগৈতিহাসিক”। যাহারা গল্পটি পড়িয়াছেন, তাদেরকে তো আর নতুন করে কিছু বলিবার নাই। তবুও একটু না বলিলেই নয়, গল্পটিতে মানুষের আদিম প্রবৃত্তির রুপায়ন, দক্ষতা, আকাঁড়া বাস্তবতা ও পরিণতির দার্শনিকতার ব্যঞ্জনা খুব সুন্দরভাবে ফুটাইয়া তোলার চেষ্টা করা হইয়াছে। সবচেয়ে বেশি আলোকপাত করা হইয়াছে কামভাবের অপরিণামদর্শী প্রভাবের উপর। মানুষ যখন কামান্ধ হইয়া সভ্যতা ভুলিয়া আদিম মাদকতায় উপনীত হয়, তখন তাহাকে আজকের সভ্যতায় মানসিক বিকারগ্রস্থ ছাড়া আর বলিবার কিছুই থাকে না। আধুনিক এবং উন্নত প্রজাতির অনেকেই হয়ত বলিবেন কাম মানুষ সৃষ্টির এবং বংশবৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম। তাই এতে দোষের কিছু নাই। তাহাদের অবগতির জন্য বলি, মানুষ আর জানোয়ারের মধ্যকার পার্থক্য হইতেছে চিন্তাশক্তি। জানোয়ারের শুধুই খাওয়া, বাঁচা আর বংশবৃদ্ধি পর্যন্তই সীমাবদ্ধতা রহিয়াছে। আর মহান সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৃষ্টির সেরা করে সৃষ্টি করিয়াছেন। মানুষকে দিয়াছেন সভ্যতা গড়ে তোলার মত চিন্তাশক্তি। দিয়েছেন উন্নত হওয়ার মত বুদ্ধিমত্তা। সেই মানুষ যখন নিছক পাপিষ্ঠ কামের অনুরণনে মজে নিজের মনুষ্যত্বকে বিলায়ে দেয়, তাহাকে চিড়িয়াখানায় বন্দি করিয়া রাখাই আমি উপযুক্ত মনে করি। 

বেশ কিছুদিন যাবত এহেন কিছু কর্মকাণ্ড দেখিয়া আমি যারপরনাই অবাক। এই মনুষ্যত্ব বিবর্জিত কাজ যাহারা করিতেছেন, তাহারা আবার ইহাকে শাশ্বত, পবিত্র প্রেম বলিয়া চালানোর চেষ্টা করিতেছেন। তাহারা বলিতেছেন, “দেখে সে ভাব কইতে মানা, ভাবুক বিনা কেউ জানেনা।“ অথবা বলিতেছে “গোপী তো একাধিক থাকতেই পারে। কিন্তু রাধা তো কৃষ্ণের মনের রানী”। সাধারন বিচারে নাকি উনাদের বিচার করা যাইবে না। আমি বলি, নির্লজ্জতার চরম অবস্থানে না পৌছিলে কেহ এমন চিন্তাও করিতে পারে না। আধুনিকতার দোহাই দিয়া তাহাদের এহেন কাজকর্ম প্রাগৈতিহাসিক যুগের কথাই বারবার মনে করাইয়া দিতেছে। দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়া কোন এক কারনে মন্তব্য করিয়াছিলাম, “হায় অভাব, হায় দুর্ভিক্ষ, পচা মাংস নিয়াও আজকাল কাকে, শকুনে আর মানুষে টানাটানি করে।“ সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার প্রার্থনা, যেন উনি মানসিক বিকারগ্রস্থ এবং পাপিষ্ঠ কামের ধুম্রজালে আবদ্ধ এই মানুষগুলোকে হেদায়েত দান করেন। যদি উনারা হেদায়েত প্রাপ্তির অযোগ্য হন, তবে যেন সৃষ্টিকর্তা উনাদের ধ্বংস করিয়া দেন। কারন এই লোকগুলো সংক্রমিত করিয়া ফেলিবে পুরো সমাজ, দেশ, তথা জাতিকে।

trafficG